

কোরআনুল কারীমের তারজুমানী
1,000.00৳
সমস্ত হামদ ও প্রশংসা, সর্বাংশে একমাত্র আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের জন্য উৎসর্গিত। ছালাত ও সালাম এবং শান্তি ও কল্যাণ তাঁর মহান রাসূলের প্রতি, তাঁর সমস্ত আল-আছহাবের প্রতি নিবেদিত। কেয়ামত পর্যন্ত যারা তাঁদের আন্তরিক অনুগামী, তাঁরা সবাই যেন এর সঙ্গে হোন যুক্ত, আমীন।
প্রিয় পাঠক! আমার অন্তরে ও অন্তর্জগতে এখন আশ্চর্য এক তরঙ্গদোলা, যার সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে উর্ধ্বলোকের সঙ্গে; যেখানে সবকিছু আলোকিত, সবকিছু জ্যোতির্ময়। চোখের সামনে আমরা যা দেখি; ঝর্ণার প্রবাহ, নদীর ঢেউ, সাগরের তরঙ্গ-উচ্ছ্বাস, এগুলোর সঙ্গে এর কোন সম্পর্ক নেই। বলতে পার, এটি আসলে আলোর তরঙ্গ, জ্যোতির প্রবাহ এবং নূরের ‘লহর”। সবার অন্তরেই এর উদ্ভাস ঘটে, তবে সবসময় ঘটে না; আর যখন ঘটে, অনুভবের মাত্রায় কমবেশী হয়।
তো প্রিয় পাঠক, এস এখন আমরা চোখের দেখা এই জগত থেকে কিছু সময়ের জন্য হলেও দূর অতীতের সুন্দর সময়ের কাছে যাই! কারণ বর্তমান আমাদের শুধু কঠিন দায়দায়িত্বের দিকে ডাকে! আর ভবিষ্যত ডাকে অনিশ্চয়তার দিকে! অতীত, শুধু অতীত আমাদের নিয়ে যায় শান্তি ও প্রশান্তির দিকে। আমরা তো সেই উম্মাহর সন্তান যাদের অতীত বড় গর্বের, গৌরবের। তাছাড়া পৃথিবীর বুকে এত ধর্মের মাঝে একমাত্র ইসলামই তার অনুসারীদের বলে অতীতমুখী হওয়ার কথা, অতীতের দিকে ফিরে যাওয়ার কথা এবং অতীত থেকে শিক্ষা নেয়ার কথা।
প্রিয় পাঠক। ঐ শোন, কঠিন বর্তমান তোমাকে ডাকছে। জ্যোতির্ময় অতীত থেকে চল ফিরে যাই কঠিন বর্তমানের কাছে। কিন্তু আশ্চর্য! এখন তো দেখি, এত কঠিন নয় বাস্তবের বর্তমান, যেমন ছিল আমাদের কল্পনার অতীত-বিচরণের আগে। এর কারণ হয়ত আমাদের ভিতরেই নিহিত। হয়ত কারণ এই যে, এখন অত্যন্ত অন্তরঙ্গভাবে আমরা অনুভব করতে পারছি, আমাদের সামনে রয়েছে এই যে পূর্ণ আলকোরআন! মাটির মানুষ হয়েও পবিত্র অবস্থায় স্পর্শ করতে পারি যে জ্যোতির্ময় আল-কোরআন! তখন তো এ অনুভব এত জীবন্ত, এত প্রাণবন্ত ও জ্যোতির্ময় ছিল না।
আল্লাহর কালাম যখন নাযিল হত, তখন ছাহাবা কেরাম আরবীভাষী এবং আরবীভাষায় পারদর্শী হওয়া সত্ত্বেও কখনো কোরআনের শব্দ, কখনো এর বাক্য ও বক্তব্য সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান লাভের জন্য ‘ছাহিবে কোরআন’ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরণাপন্ন হতেন। তিনি তাঁদেরকে শব্দের প্রতিশব্দ, বা বাক্য ও বক্তব্যের ব্যাখ্যা উল্লেখ করে বুঝিয়ে দিতেন। দুনিয়া হতে তাঁর বিদায় গ্রহণের পর এ প্রয়োজন-ধারা ছাহাবায়ে কিরামের জীবনেও অব্যাহত ছিল।”
যখন সাধারণ ছাহাবী কোরআনের কোন আয়াত বা শব্দের অর্থ ও মর্ম অনুধাবনে সমস্যা ও জটিলতার সম্মুখীন হতেন তখন তাঁরা কোন বিশিষ্ট ছাহাবীর শরণাপন্ন হতেন। ছাহাবী আল্লাহর নবীর কাছ থেকে যে অর্থ ও মর্ম গ্রহণ করেছেন সেটা প্রশ্নকারীর সামনে তাঁর বুঝ ও সমঝের স্তর অনুযায়ী তুলে ধরতেন। এভাবে মানুষের ভাষায় মানুষের শব্দে আল্লাহর কালামের অর্থপ্রকাশের প্রয়াস-প্রচেষ্টার শুরু। তবে এটা, ঠিক তরজমা বা অনুবাদ ছিল না; ছিল আরবী শব্দ ও বাক্য দ্বারা আরবী কোরআনের ‘অর্থায়ন’।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যাকে আমরা বলি কোরআন বা কালামুল্লাহ্ তা হচ্ছে ঐ মহান কালাম যা আরবীভাষায় আসমান থেকে হযরত জিবরীল আমীনের মাধ্যমে হযরত মুহম্মদ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল হয়েছে। সুতরাং আসমান থেকে নাফিল করা আরবীভাষায় যখন তিলাওয়াত করা হবে তখনই সেটা হবে কোরআনের তিলাওয়াত, যার অসংখ্য ফযীলত হাদীছে বর্ণিত হয়েছে। কোরআনের অর্থানুবাদ ও তরজুমানি পাঠ করা কিছুতেই কোরআনের তিলাওয়াত নয়। যদিও কোরআনের জ্ঞান অর্জনের প্রচেষ্টা হিসাবে নিজ নিজ ভাষায় কোরআনের ‘অর্থ’ পাঠেরও নিজস্ব আজর ও ছাওয়াব রয়েছে।
Reviews
There are no reviews yet.